Astrology Journeys

Horoscope reading, Prediction, Palm reading, Numerology, Gem Stone, Mantras, Reiki, Meditation & astrology article,রাশিফল, জন্ম ছক বিশ্লেষণ, রত্ন, মন্ত্র,রেইকি, ধ্যান।

Breaking

সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০২০

RUDRAKSH, রুদ্রাক্ষ


রুদ্রাক্ষ সৃষ্টির নেপথ্য কাহিনী

ভগবান নারায়ণকে মহর্ষি নারদ একবার নিবেদন করলেন যে, হে ভগবান! আপনি যে রুদ্রাক্ষের মহিমার এত বর্ণনা দিলেন,এখন আমায় অনুগ্রহ করে সেই রুদ্রাক্ষের সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে বলুন এবং রুদ্রাক্ষ এত লোক পুজ্য হল কেন তাও আমি জানতে বড়ই আগ্রহী।

রিসি নারীদের এই কথা শুনে নারায়ন বললেন, বৎস! তুমি আমাকে আজ যে প্রশ্ন করলে, একবার কৈলাসবাসিন ভগবান রুদ্রদেবকে ঠিক এরূপ প্রশ্নই করেছিলেন। ভগবান রুদ্রদেব কার্তিককে যেরূপ বলেছিলেন আমিও তোমাকে ঠিক সেরূপই বলছি, তুমি শুনতে থাকো।

পুরাকালে ত্রিপুরা নামে সর্বদুর্জয় এক দৈত্য জন্মেছিল। ব্রহ্মা,বিষ্ণু প্রভৃতি দেবগন তার নিকট পরাজিত হয়ে রুদ্র দেবের নিকটে আসে দৈত্যকে বধ করবার প্রার্থনা নিয়ে। ভগবান রুদ্র এই প্রার্থনা শুনে ত্রিপুরা অসুরকে বধ করার অভিপ্রায়ে অঘোর নামে এক ভীষণ সর্ববিদ্যা ময় দিব্য অস্ত্রের স্মরণ করলেন। ভগবান রুদ্র সেই অঘোর অস্ত্রের চিন্তা করে সহস্ত্র বছর উন্মীলিত নয়নে অবস্থান করেছিলেন; ক্ষণকালের জন্যও চক্ষুর নিমেষ ত্যাগ করেননি। এই কার্যকারণে তার চক্ষু আহত হওয়ায়, চক্ষু থেকে জলবিন্দু পতিত হয়। সেই অশ্রুবিন্দু থেকেই সর্বলোকের হিতকামনায় মহারুদ্রাক্ষ বৃক্ষের জন্ম হয়। এই রুদ্রাক্ষ 38 প্রকারের। তারমধ্যে ভগবানের সূর্যরূপ নেত্র থেকে দ্বাদশ প্রকার পিঙ্গলবর্ণের, চন্দ্ররূপ নেত্র থেকে ষোড়শ প্রকার শ্বেতবর্ণ এবং অগ্নিরূপ নেত্র থেকে দশ প্রকার কৃষ্ণবর্ণ রুদ্রাক্ষের সৃষ্টি হয়। ইহাদের ভিতর শ্বেতবর্ণ রুদ্রাক্ষ ব্রাহ্মণদিগের জন্য, রক্তবর্ণ রুদ্রাক্ষ ক্ষত্রিয়দের জন্য মিশ্রবর্ণ রুদ্রাক্ষ বৈশ্যদের জন্য ও কৃষ্ণবর্ণ রুদ্রাক্ষ শূদ্রদের জন্য ধারণীয়। তবে বৈশ্যগণও কৃষ্ণবর্ণ রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে পারে।

রুদ্রাক্ষ ধারণের ফলাফল :

একমুখী রুদ্রাক্ষ :

একমুখী রুদ্রাক্ষকে সাক্ষাৎ শিব স্বরূপ বলে মানা হয়। এই রুদ্রাক্ষ শুধুমাত্র দর্শনেই মানুষের অনেক কল্যাণ হয়। যে ঘরে এই রুদ্রাক্ষের পূজা করা হয়ে থাকে, সেই ঘরে সুখ, সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। যিনি এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করবেন তিনি সর্বদা যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন। কোন বিপদ তাকে স্পর্শ করতে পারে না। কোন ধরনের ভয় তাকে কাবু করতে পারে না। তার মনোস্কামনা অবশ্যই পূর্ণ হয়। দেবীভাগবতে উল্লেখ আছে যে এই রুদ্রাক্ষ সর্ব সুখ দান করে।
একমুখী রুদ্রাক্ষ হাড়, হৃদরোগ, ধমনীর রোগ, রক্ত সঞ্চালন, রক্ত বিকার, গ্রন্থি বিকার ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি দেয়। এই রুদ্রাক্ষ যদি কোন ব্যবসায়ী ধারণ করেন অথবা কোনো গৃহস্থ যদি তার সম্পদ রাখার স্থানে একে রেখে দেন তবে তার সম্পদ দিন দিন বৃদ্ধি পায়। রবি গ্রহের বিরূপতায় এই রুদ্রাক্ষ অভূতপূর্ব লাভ দেয়। আত্ম বল বৃদ্ধির জন্য এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা অতি উত্তম।

দুই মুখী রুদ্রাক্ষ :

দুই মুখী রুদ্রাক্ষকে ভগবান শিব ও মা পার্বতীর রূপ বলে মানা হয়ে থাকে। একে অর্ধনারীশ্বর রুদ্রাক্ষও বলা হয়ে থাকে। রুদ্রাক্ষের ধারণ কর্তার ত্রিবিধ পাপের নাশ হয়। ধারকের প্রচুর ঐশ্বর্য প্রাপ্তি ঘটে।যাদের বিবাহিত জীবনে সন্তান লাভের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি হয় তাদের এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা উচিত। এটি ধারণে ধারণ কর্তার বিকাশ ঘটে। দুই মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণে স্মৃতিশক্তি ও মানসিক বল প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং গৃহের অশান্তি দূরীভূত হয়। ধারণ কর্তার মনস্কামনা পূর্ণ হয় এবং সমস্ত কাজেই সফলতা লাভ হয়। পেটের যে কোনো রোগে, মহিলাদের কোন রোগে বিশেষত বক্ষস্থলের কোন রোগে বিশেষ কাজ দেয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি, সন্তান লাভ, পিতা-পুত্র সম্পর্কের উন্নতি, মানসিক দুর্বলতা, মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদিতে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের লাভ হয়। যাদের জন্ম ছকে চন্দ্র পীড়িত চন্দ্রের মহাদশা চলছে তারা এই রুদ্রাক্ষ ধারণেরষ শুভ ফল লাভ করবেন। যে সমস্ত মহিলাদের গৃহে অশান্তি আছে তারা দুই মুখী রুদ্রাক্ষের অবশ্যই করবেন।

তিন মুখী রুদ্রাক্ষ :

শাস্ত্র অনুযায়ী এই রুদ্রাক্ষ ধারণের অগ্নি স্বরূপ ফল লাভ হয়। এই রুদ্রাক্ষের সত্ত্বগুণ, তমোগুণ, রজোগুণ এই তিনটি গুণই বিদ্যমান। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এই তিন দেবতার আশীর্বাদ এই রুদ্রাক্ষতে আছে। বিদ্যার্থীদের জন্য এই রুদ্রাক্ষ খুবই উপকারী।যারা সামরিক বিভাগে বা পুলিশ বিভাগে চাকুরী করেন তাদের এই রুদ্রাক্ষ অতি প্রয়োজনীয়। যাদের মঙ্গল গ্রহ বিরূপ আছে বা মঙ্গলের মহাদশা চলছে তারা এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে। তিন মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণে প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যে মহিলার বারবার গর্ভপাত হয় তাকে ধারণ করানো উচিত এবং প্রত্যহ এই রুদ্রাক্ষের পূজা করা উচিত।এই রুদ্রাক্ষ ধারণের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, পেটের বিকার থেকে মুক্তি ঘটে, লোহিত রক্ত কণিকা বৃদ্ধি করে ও রক্তচাপ বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে।

চার মুখী রুদ্রাক্ষ :

এই রুদ্রাক্ষকে চতুর্মুখ ব্রম্ভার স্বরূপ এবং চার বেদের শক্তি এবং রূপ নিহিত আছে বলে মানা হয়ে থাকে। এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে ধর্ম, অর্থ, কাম, মোহ এই চারটিই লাভ হয়ে থাকে। এটি ধারণের ফলে বুদ্ধির বৃদ্ধি এবং মানসিক বল বৃদ্ধি হয়ে থাকে। যে শিশু কথা বলতে অক্ষম অথবা যে শিশুর বুদ্ধি অত্যন্ত কম তাকে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করালে অবশ্যই ভালো ফল লাভ করা যায়। বিদ্যার্থীরা এটি ধারন করলে পড়াশোনায় মনোযোগী হয়।
হাত বা কব্জির দুর্বলতা, মস্তিষ্কের কোন স্নায়বিক দুর্বলতা, থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে এই রুদ্রাক্ষ বিশেষ লাভ প্রদান করে। বুদ্ধিজীবীবর্গ, বৈজ্ঞানিক, গণিত অথবা বাণিজ্য নিয়ে যিনি অধ্যয়ন করছেন এরূপ বিদ্যার্থী, লেখক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, অনুসন্ধানকারী ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের জন্য এই রুদ্রাক্ষ অতি লাভদায়ক।বুধ গ্রহের কোন দূর্বলতা থাকলে অথবা বুধ গ্রহের মহাশয় এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা যেতে পারে। যে ছাত্র কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দেবে সে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের খুবই সুফল লাভ করবে।

পাঁচ মুখী রুদ্রাক্ষ :

পাঁচ মুখী রুদ্রাক্ষকে সাক্ষাৎ রুদ্র অর্থাৎ ভগবান শিবের সঙ্গে তুলনা করা হয়। একই কালাগ্নিও বলা হয়। এই রুদ্রাক্ষ প্রচুর প্রভাবশালী এবং ধরনের মানসিক স্থিরতা প্রাপ্তি হয়। জ্ঞান বৃদ্ধির সহায়ক ও মানসিক অশান্তি দূর হয়।
পাঁচ মুখী রুদ্রাক্ষ স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ুর জন্যও বিশেষ উপকারী। এই রুদ্রাক্ষ আধ্যাত্বিক সুখও বৃদ্ধি করে। এর মালা ধারন করলে  অত্যন্ত শুভ ফল লাভ করা যায়।যিনি এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করেন তার মন এত পবিত্র থাকে যে তার মনে পাপ কাজ স্থান পায় না। এতে গ্রহদোষ কাটবে এবং গ্রহ সহায় হবে। নারী বা পুরুষের বিবাহের সমস্যায় নারী এই রুদ্রাক্ষের নিয়মিত পূজা করবেন এবং পুরুষ এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করবেন, তাহলে এই দোষ থেকে মুক্ত হবেন।
রক্তচাপ, যকৃতের সমস্যা, হেপাটাইটিস বি, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড, পিটুইটারি গ্ল্যান্ড ইত্যাদি রোগে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে সুফল লাভ হয়। অকাল মৃত্যু যোগে এই রুদ্রাক্ষ ধারণে বিশেষ ফল লাভ করা যায়।পূজা-অর্চনা সময় অথবা কোন মন্ত্র জপের জন্য পাঁচ মুখী রুদ্রাক্ষ অতি উত্তম বলে মানা হয়।

ছয় মুখী রুদ্রাক্ষ :

ছয় মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণে বিদ্যা, বুদ্ধি ও জ্ঞান বৃদ্ধির সহায়ক হয় ও মেধাশক্তির বৃদ্ধি ঘটায়। বিদ্যার্থীদের স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায় অধ্যায়নে আগ্রহ জন্মায়। বিশেষ কোন কর্মপরিকল্পনায় এই রুদ্রাক্ষ সফলতা এনে দিতে সাহায্য করে। কাম, ক্রোধ, লোভ, মুহু থেকে মুক্তি লাভ করে আত্মশক্তি শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং জ্ঞান শক্তির স্থিরতা আনতে সাহায্য করে।
এই রুদ্রাক্ষ ধারণে চর্মরোগ, চোখের রোগ, যৌন সমস্যা, দুর্বলতা, কিডনির রোগ, গলার রোগ, হৃদরোগ প্রশমিত হয়।
শিক্ষকতা, পত্রিকার সম্পাদক, পত্রকার,ব্যবসায়ী কিংবা নাটক বা ফিল্ম লাইনের সাথে যুক্ত আছেন এমন ব্যক্তি এই রুদ্রাক্ষ ধারণে বিশেষ ফল লাভ করে থাকেন। যৌন রোগ অথবা স্নায়ু দৌর্বল্য বা যৌন অক্ষমতা থাকলে কিংবা শুক্র গ্রহের কারণে সমস্যা দেখা দিলে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের শুভ ফল লাভ সম্ভব হয়।

সাতমুখী রুদ্রাক্ষ :

সাতমুখী রুদ্রাক্ষকে মহা লক্ষ্মীর সহিত তুলনা করা হয়। একে কামদেবের রূপ বলেও স্বীকার করা হয়ে থাকে। যারা অধিক সম্পদ লাভ বা ভাল চাকুরী লাভে আগ্রহী তাদের এই রুদ্রাক্ষ ধারণে শুভ ফল লাভ হয়ে থাকে। শরীরের রোগ মুক্তি, মনের শান্তি, সামাজিক সম্মান, স্ত্রী সুখ, অর্থ প্রাপ্তি ইত্যাদি লাভ হয়। শারীরিক ও মানসিক কষ্ট থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।
শনি গ্রহের কারণে দুঃখ কষ্ট বা শনি গ্রহের মহাদশা চললে এই রুদ্রাক্ষ ধারণে শনি গ্রহের বিরূপতা প্রশমিত হয়। শনির সাড়েসাতি চলাকালীন এই রুদ্রাক্ষ ধারণে শুভ ফল লাভ করা সম্ভবপর হয়। কোমরের নিচের অংশে প্রচুর ব্যথা, বহু পুরাতন কোন ব্যাধি, হাড়ের ব্যথায় কষ্ট ইত্যাদিতে এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সুফল লাভ হয়।

আটমুখী রুদ্রাক্ষ:

এই রুদ্রাক্ষের অধিষ্ঠাতা দেবতা শ্রীগণেশ। অন্য মত কালভৈরব কে এর প্রতিষ্ঠাতা দেবতা বলে মানা হয়। শাস্ত্র মতে এই রুদ্রাক্ষ ধারণকারী কে অষ্টদেবী এবং অষ্টবিনায়ক সর্বদা রক্ষা করেন। ধারণকারীর আট প্রকার প্রকৃতি(আকাশ, পৃথিবী, অগ্নি, বায়ু, জল, মন, বুদ্ধি এবং কৃপা) সহায় হন। নিদ্রা রোগ থাকলে তা সম্পূর্ণভাবে দূরীভূত হয়। এই রুদ্রাক্ষ ধারণের ফলে ব্যক্তির সাহস, মনোবল, সম্মান বৃদ্ধি পায়। দুর্ঘটনা, শত্রু ষড়যন্ত্র, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। মৃগী রোগ অথবা চক্ষু রোগে সুফল লাভ হয়।রাহু গ্রহের সমস্যায় এই রুদ্রাক্ষ ধারনে গ্রহ দোষ থেকে মুক্তি লাভ হয় এবং কালসর্প যোগ বা ভারী দুর্ঘটনা যোগ প্রশমিত হয়।

নয়মুখী রুদ্রাক্ষ:

দেবীভাগবত মতে এই রুদ্রাক্ষে স্বয়ং মা দুর্গার আশীর্বাদ আছে ও নবদুর্গার পূর্ণ শক্তি এই রুদ্রাক্ষের সমাহিত আছে।এই রুদ্রাক্ষ ধারণে শক্তি লাভ হয় এবং ধারণ কর্তা তীর্থভ্রমণের পূর্ণ ফল সঞ্চয় করেন। আর্থিক স্থিতিশীলতা, সাহস, বীরত্ব, কর্মনিপুণতা ও সহনশীলতার মধ্যে অদ্ভুত সামঞ্জস্য প্রদান করে থাকে। এই রুদ্রাক্ষ ধারণ জীবনকে সুখময় করে তোলে। দেবী দুর্গার উপাসক যারা তাদের এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সুফল লাভ হয়। চর্মরোগ, শরীরের ব্যথা বেদনা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।জন্ম ছকে কেতু গ্রহের কারণে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে বা কেতু গ্রহের মহাদশা চললে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের সুফল লাভ হয়।


দশমুখী রুদ্রাক্ষ:
শ্রীহরি বিষ্ণু এই রুদ্রাক্ষের দেবতা। এই রুদ্রাক্ষে শ্রীহরির দশ অবতারের পূর্ণ কৃপা বর্ষিত হয় এবং মা লক্ষ্মী পূর্ণ কৃপা প্রদান করেন। এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সর্ব গ্রহ বাধা দূর হয়ে গ্রহরা শান্ত থাকেন। গ্রহের কারণে কাজে বাধাপ্রাপ্ত হলে বা ভাগ্য কিছুতেই প্রসন্ন না হলে এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সুফল লাভ হয়ে থাকে। এই রুদ্রাক্ষ ধারণে নবগ্রহের কৃপা লাভ হয়।রাজনীতি বা সামাজিক কাজের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সফলতা আসে।সৃজনাত্মক কাজ, চারুকলা বা কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত বুদ্ধি প্রয়োগের ক্ষেত্রে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের প্রভূত সুফল লাভ হয়। বিবাহিত জীবনের সমস্যা,রক্ত সমস্যা বা ডায়াবেটিস রোগে এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সুফল লাভ হয়।বৃহস্পতি গ্রহের সমস্যায় বা বৃহস্পতি গ্রহের মহা দশায় এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে বৃহস্পতি গ্রহের কৃপা লাভ হয়।

এগারোমুখী রুদ্রাক্ষ:
হনুমান হলেন রুদ্রাক্ষের অধিপতি দেবতা। এই রুদ্রাক্ষ ধারণে মনের ভিতরে ভয় স্থান পায় না। জীবনে প্রচুর সংগ্রামের ক্ষেত্রে এবং বিফলতা রোধে, মানসিক কোনও সমস্যায় বা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম হলে সেই ক্ষেত্রে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ সুফল দান করে। স্নায়ুর সমস্যা, মানসিক অবসাদ ইত্যাদিতে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে শুভ ফল লাভ হয়। এই রুদ্রাক্ষ ধারণের ঐশ্বর্য্য প্রাপ্ত হয়, কাজের সফলতা আসে, শরীরকে নীরোগ করে, শারীরিক বৃদ্ধি পায়, মনের স্থিরতা অনে, সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, ব্যবসায় উন্নতি আনে, সন্তানের ভাগ্য প্রসন্ন হয়, সুখ প্রাপ্তি হয় এবং স্বভাব চরিত্রের উন্নতি হয়।
যে সকল ব্যক্তি আধ্যাত্মিক জগতের সঙ্গে যুক্ত, ধ্যান, সাধনা ইত্যাদিতে নিমগ্ন থাকেন তাদের এই রুদ্রাক্ষ ধারণে  কার্যে পূর্ণ সফলতা লাভ হয়। শারীরিকভাবে রুগ্ন বা মৃগী রোগে ভুগছে এমন শিশু তাকে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করানো উচিত। হাত পায়ে ব্যথা, কর্মক্ষেত্রে উন্নতি, বিদেশযাত্রায় বাধা ইত্যাদি ক্ষেত্রে 11 মুখী রুদ্রাক্ষ সুফল দান করে। দুর্ঘটনা যোগ থাকলে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের সেই যোগ প্রশমিত হয়। বুধ গ্রহের কারণে সমস্যা এই রুদ্রাক্ষ ধারণে প্রশমিত হয়। যেসমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী অথবা লেখাপড়া ঠিকমত মনে রাখতে পারে না তারা যদি এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করে তবে সুফল লাভ করতে পারবে।

বারোমুখী রুদ্রাক্ষ:
এই রুদ্রাক্ষের অধিপতি দেবতা হলেন সূর্যদেব। এই রুদ্রাক্ষ ধারণের মনের ভয়-ভীতি দূরীভূত হয়। এই রুদ্রাক্ষ ধারণের ধারণকারী দয়াশীল, দাতা, গুনবান এবং চারিত্রিকভাবে প্রচন্ড তেজস্বী হয়। শিক্ষকতা অথবা যারা নেতৃত্ব দেন এই রুদ্রাক্ষ ধারণে লোক তাদের বশীভূত হয়। চক্ষুরোগ কমে, শারীরিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, মানসিক এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি ও যশ হয়। যেকোনো কাজে নিষ্ঠা লাভ করা যায়। কর্মক্ষেত্রে ও ব্যবসায় যশলাভ হয়। রবি গ্রহের কারণে সৃষ্ট সমস্যা বা রবি গ্রহের মহাদশায় এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সুফল লাভ হয়।

তেরোমুখী রুদ্রাক্ষ:
এই রুদ্রাক্ষের অধিপতি হলেন ভগবান কার্তিক। মতান্তরে এই রুদ্রাক্ষের অধিপতি হলেন দেবরাজ ইন্দ্র। এটিকে কামদেবের রূপ বলেও মানা হয়। সমস্ত প্রকার সিদ্ধিলাভ, সাংসারিক মনস্কামনা পূর্ণ, মন-যশ-প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বৃদ্ধি করা এবং উচ্চ পদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই রুদ্রাক্ষ বশীকরণের ন্যায় শক্তি প্রদান করে থাকে। যারা জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়ে চর্চা করেন তাদের পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী। এই রুদ্রাক্ষ ধারণ কর্তা কখনো প্রতারকের দ্বারা প্রতারিত হন না। পুরনো দাম্পত্য সুখ, সন্তান প্রাপ্তি, বাক শক্তি বৃদ্ধি, সাংসারিক সুখ প্রাপ্তি হয়ে থাকে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের দ্বারা।এই রুদ্রাক্ষ ধারকেরা কোন অচেনা ব্যক্তিকে অতি সহজেই তার প্রতি আকর্ষিত করতে পার। পেটের রোগ, অজীর্ণ, আমাশা, অতিরিক্ত বায়ু বৃদ্ধি হওয়া ইত্যাদি রোগে এই রুদ্রাক্ষ সুফল দান করে। মাথার যন্ত্রণা রোগে এবং যৌন রোগে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ ফলপ্রদ। সন্তান লাভ করতে এই রুদ্রাক্ষ সাহায্য করে। সরকারী চাকুরীজীবিদের পদোন্নতির জন্য রুদ্রাক্ষ ধারণ করা ভালো।শুক্র গ্রহের কারণে কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে অথবা শুক্র গ্রহের মহা দশায় এই রুদ্রাক্ষ ধারণ সুফল দান করে।

চৌদ্দমুখী রুদ্রাক্ষ:
এক মুখি রুদ্রাক্ষের মত এই রুদ্রাক্ষ অতি দুর্লভ বস্তু। এই রুদ্রাক্ষের অধিপতি দেবতা স্বয়ং মহাদেব। এটি ধারনে ভগবান শিবের কৃপা লাভ করা যায়। জন্ম ছকে রোগ, হানি, দুর্ঘটনা অথবা ঋণজালে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনায় এই 14 মুখি রুদ্রাক্ষ ধারনে সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারা যায়। অতিরিক্ত চিন্তা, শত্রু দমন, সাংসারিক সুখ, সমৃদ্ধি, আর্থিক লাভ ইত্যাদির কারণে এই রুদ্রাক্ষ ধারণে শুভ ফল লাভ হয়। এই রুদ্রাক্ষ ধারণে 6 টি ইন্দ্রিয় অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে ওঠার ফলে ধারণ কর্তা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্পষ্ট উপলব্ধি করতে পারে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। জ্যোতিষী, ব্যবসায়ী, ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতা এই রুদ্রাক্ষ ধারণের অধিকতর সুফল লাভ করতে পারেন।জন্ম ছকে স্বল্পায়ু যোগ বা পুরাতন কোন জটিল রোগে এই রুদ্রাক্ষ ধারণের সুফল লাভ হয়। মঙ্গল গ্রহের দ্বারা সৃষ্ট সমস্যা বা মঙ্গল গ্রহের মহাশয় এই রুদ্রাক্ষ ধারণের এই গ্রহের কৃপালাভ হয়।

গৌরীশংকর রুদ্রাক্ষ:
যেসকল রুদ্রাক্ষ সৃষ্টিকাল থেকেই দুটি একসাথে জোড়া লাগা অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে তাকে গৌরীশংকর রুদ্রাক্ষ বলা হয়। এই রুদ্রাক্ষকে স্বয়ং শিব এবং পার্বতীর রূপ হিসেবে মানা হয়। এটি অতি দুর্লভ বস্তু।লক্ষ লক্ষ রুদ্রাক্ষের ভিতরে মাত্র কয়েকটি এই ধরনের রুদ্রাক্ষ দেখতে পাওয়া যায়। এই রুদ্রাক্ষে প্রচুর দিব্য শক্তি এবং ঐশ্বরিক ক্ষমতা নিহিত থাকে।এই রুদ্রাক্ষে একমুখী থেকে 14 মুখি রুদ্রাক্ষের সমস্ত শুভ ক্ষমতাই অন্তর্নিহিত আছে। দাম্পত্য সুখের অভাব, স্বামী-স্ত্রীর মতপার্থক্য, দাম্পত্য জীবনে অশান্তি, শ্বশুর শাশুড়ির সাথে কলহ ইত্যাদি সমস্যায় স্বামী বা স্ত্রী অথবা উভয়েই এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে পারেন। প্রেম ঘটিত ব্যাপারে সমস্যা সৃষ্টি বা বিবাহের ব্যাপারে কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে প্রেমিক বা প্রেমিকা কিংবা উভয়ই এই রুদ্রাক্ষ ধারনে সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়ার আশা থাকে। একমুখি রুদ্রাক্ষের মত এই রুদ্রাক্ষও যে কোন পুরুষ বা নারী ধারণ করতে পারেন। এর ফলে জীবনে কোন কষ্ট, আর্থিক হানি, সম্পদ নষ্ট ইত্যাদি রোধ হয় ও সিদ্ধান্তে অটল থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।মহিলারা পূর্ণ ভক্তি সহকারে এই রুদ্রাক্ষের পূজা-পাঠ করলে সংসারে লক্ষ্মী অচলা থাকেন এবং সংসার সুখের হয়ে ধন-সম্পদে ভরে ওঠে।এই রুদ্রাক্ষ বাড়িতে পূজাস্থলে রেখে দৈনন্দিনের পূজা করলে সুফল দান করে থাকে। জন্ম ছকে বৃহস্পতি গ্রহের কোন সমস্যা বা বৃহস্পতি গ্রহ পীড়িত অথবা বৃহস্পতির মহাদশায় এই রুদ্রাক্ষ ধারণে প্রচুর সুফল লাভ হয়।

গণেশ রুদ্রাক্ষ:
এই রুদ্রাক্ষের গায়ে জন্মকাল থেকেই শ্রীগনেশ দেবতার শু৺ড়ের মত শু৺ড় দেখতে পাওয়া যায়। এই রুদ্রাক্ষ অতি দুর্লভ বস্তু। এই রুদ্রাক্ষ ধারনে জীবনে সমস্ত রকমের সুখ-সম্পদ প্রাপ্ত হয়ে থাকে। রুদ্রাক্ষ ধারনে ব্যবসার উন্নতি হয়। অর্থ ও সম্পদ হানি হবার হাত থেকে এই রুদ্রাক্ষ রক্ষা করে। জীবনে উন্নতির সুযোগ দান করে। এই রুদ্রাক্ষ ধারনে সমস্ত কার্যে সিদ্ধি লাভ হবার সম্ভাবনা থাকে।







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন