নক্ষত্র নির্দিষ্ট রোগ
গ্রহগন এবং রাশিগনের কাতরতায় মানবদেহে যেমন কিছু কিছু রোগের প্রভাব রয়েছে তেমনি নক্ষত্র কাতরতায় কিছু কিছু রোগের প্রভাব বর্তমান। এখানে নক্ষত্র প্রভাবিত সম্ভাব্য রোগ সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করা হলো:
- অশ্বিনী নক্ষত্র: বাতবেদনা, অনিদ্রা, মতিভ্রম, শিরঃপীড়া।
- ভরণী নক্ষত্র: স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অলসতা এবং প্রবল জ্বর।
- কৃত্তিকা নক্ষত্র: কলিক ব্যথা, প্রদাহ, অনিদ্রা।
- রোহিণী নক্ষত্র: জ্বর, মাথারযন্ত্রণা, মাথাধরা, প্রলাপ এবং কুক্ষিগতউদর বেদনা।
- মৃগশিরা নক্ষত্র: বাতব্যাধি, চর্মরোগ।
- আদ্রা নক্ষত্র: বাতবেদনা, জ্বর, অনিদ্রা এবং শ্লেষ্মাঘটিত পীড়া।
- পুনর্বসু নক্ষত্র: জ্বর, শিরোরোগ, কোমরের ব্যথা।
- পুষ্যা নক্ষত্র: জ্বর, শরীর বেদনা এবং পিত্ত প্রদাহ।
- অশ্লেষা নক্ষত্র: পায়ের ব্যথা, সর্বাঙ্গে কষ্টদায়ক অস্থিরতা।
- মঘা নক্ষত্র: বাত বেদনা, শিররোগ।
- পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র: জ্বর, শিরোপীড়া, সর্বাঙ্গে কষ্টদায়ক অস্থিরতা।
- উত্তরফাল্গুনী নক্ষত্র: জ্বর, বাত বেদনা।
- হস্তা নক্ষত্র: উদর বেদনা, কোষ্ঠবদ্ধতা।
- চিত্রা নক্ষত্র: কষ্টদায়ক অস্থিরতা।
- স্বাতী নক্ষত্র: কষ্টদায়ক জ্বর, অস্থিরতা।
- বিশাখা নক্ষত্র: উদরবেদনা, সর্বাঙ্গে তাপ বৃদ্ধি।
- অনুরাধা নক্ষত্র: তীব্র জ্বর,শিরোরোগ, সর্বাঙ্গে অস্থিরতা।
- জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র: শরীর কম্পন, পিত্তরোগ।
- মূলা নক্ষত্র: উদররোগ, মুখের রোগ।
- পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র: কম্পোজ্বর, সর্বাঙ্গে প্রদাহ,শিরোরোগ।
- উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্র: কোমরে বাত, শূলবেদনা, বিকার জ্বর।
- শ্রবণা নক্ষত্র: মুত্রকৃচ্ছ, জ্বর, অতিসার।
- ধনিষ্ঠা নক্ষত্র: আমাশয়, কম্পন, জ্বর।
- শতভিষা নক্ষত্র: জ্বর, বাত, সন্নিপাত।
- পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্র: বমন, শিরোপীড়া, অস্থিরতা।
- উত্তরভাদ্রপদ নক্ষত্র: বাতবেদনা, দন্তশূল।
- রেবতী নক্ষত্র: পিত্তঘটিত রোগ, জ্বর, বাত।
গ্রহগণ সর্বদা গতিশীল হওয়ায় জন্মকলীন গ্রহাদির অবস্থানের বিবরণের নাম রাশিচক্র এবং জন্মের পরে বিভিন্ন সময়ে গ্রহদির পরিবর্তিত অবস্থানগত বিচারের নাম গোচর। গ্রহগনের এক রাশি ভোগকাল হল- রবির 1 মাস, চন্দ্রের সওয়া দুই দিন। মঙ্গলের 45 দিন, বুধের 18 দিন, বৃহস্পতির 1 বৎসর, শুক্রের 28 দিন, শনির আড়াই বৎসর, রাহু ও কেতুর দেড় বৎসর।
গোচরে অশুভ গ্রহগণ জন্ম, মানস ও বিনাশ নাড়ীতে এবং বিপদ, প্রত্যরি, বধ তারায় সঞ্চারিত হইলে জাতকের কিছুনা কিছু রোগভোগের সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই গোচর বিচারের মাধ্যমে রোগভোগের সময় পূর্বেই নির্ণয় করে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা মঙ্গল জনক।
জন্ম ছকে গ্রহসন্নিবেশ অনুযায়ী রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অশুভ গ্রহ কোনভাব পতি হয়ে কোনভাবে স্থিত হয়েছেন তা যেমন দেখতে হবে তেমনি গ্রহের দশা-অন্তর্দশা বিচারও আবশ্যক।
ষষ্ঠ, অষ্টম, দ্বাদশ স্থান হল দুঃস্থান। ষষ্ঠ ভাবের অপর নাম রিপুভাব বা শত্রুভাব, রোগই হলো মানুষের প্রধান শত্রু। সেজন্য রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রিপুভাব এবং রিপুভাবপতির গুরুত্ব অনেকখানি।
অষ্টমস্থান হল মারকস্থান, এই স্থান মৃত্যু সূচনা করে। তাছাড়া এটি আবার আয়ুস্থান। মৃত্যু এবং আয়ু পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। কারণ মৃত্যু হওয়ায় আয়ু শেষ হওয়া, তাই মৃত্যুও একটি রোগ।
দ্বাদশস্থান হল ব্যয়স্থান। ব্যয় অর্থাৎ হানি। রোগ ভোগ হওয়া মানে শরীরের শক্তি সামর্থ্য জীবনীশক্তি সব কিছুরই হানি বা ব্যয় হওয়া। তাই ষষ্ঠ, অষ্টম, দ্বাদশস্থান দুঃস্থান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন