জ্যোতিষে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা:
রশ্মি চিকিৎসা মানবকল্যাণকর। জেম থেরাপি জ্যোতিষশাস্ত্রের একটি উল্লেখযোগ্য শাখা।জেম থেরাপির ক্ষেত্রে রাশি, নক্ষত্র, গ্রহের কাতরতা এবং গ্রহের শুভাশুভ বিষয়ে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।জাতক জাতিকার জন্ম ছকের গ্রহের অবস্থান এবং তাদের শুভাশুভ প্রভাব বিচার করে রত্ন ধারণ করলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নিরাময় ও রোগ রোগের প্রতিষেধক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
দ্বাদশ রাশির কাতরতা (রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে):
মেষ রাশি: আঘাত, মস্তিষ্ক পীড়া, অস্থিরচিত্ততা, মানবিক চাঞ্চল্য, পুরনো হাঁটুর ব্যথা, চোখের রোগ, বাতের ব্যথা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মেষ রাশির প্রভাবে হয়।
বৃষ রাশি: জন্ডিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, যকৃত-পাকস্থলীর রোগ, বাত ব্যথা, ফোড়া, অম্বল, বহুমূত্র ইত্যাদির বৃষ রাশির প্রভাবে হয়।
মিথুন রাশি: টনসিল, নাক, কান, হৃদরোগ, রক্তচাপ বৃদ্ধি এবং বাত বেদনা মিথুন রাশির প্রভাবে হয়।
কর্কট রাশি: কন্ঠ, তালু, চক্ষু, কর্ণ, জিভ, ফুসফুস, বক্ষস্থল, রক্ত সঞ্চার ও পিত্তকে কর্কট রাশি প্রভাবিত করে।
সিংহ রাশি: হৃদরোগ, মস্তিষ্কের রোগ, রক্তচাপ, মস্তিষ্ক পীড়া, মেরুদন্ড ও মজ্জার রোগ, উদর বেদনা, মাথার বা ব্রেন টিউমার ইত্যাদি সিংহ রাশির প্রভাবিত রোগ।
কন্যা রাশি: লিভার, পাকাশয় সংক্রান্ত রোগ, মনের রোগ, টাইফয়েড, জন্ডিস, চোখের রোগ, দাঁতের রোগ এবং মাথাঘোরা প্রভৃতি রোগ কন্যা রাশি প্রভাবিত।
তুলা রাশি: কোমর, পাছা, অর্শ, পেটের রোগ, ডায়াবেটিস, পিত্ত প্রভাবিত রোগ, পিত্তথলির রোগ প্রভৃতি তুলা রাশির প্রভাবে হয়।
বৃশ্চিক রাশি: টাইফয়েড, আমাশয়, জননেন্দ্রিয়ের রোগ, গুপ্তরোগ, লিঙ্গ ও গ্রহ্যদেশের রক্ত সঞ্চার জনিত রোগ, জননেন্দ্রিয়ের ক্রনিক রোগ ইত্যাদি বৃশ্চিক রাশির প্রভাবে হয়।
ধনু রাশি: লিভারের রোগ, চর্মরোগ এলার্জি, ডিফথেরিয়া, হজমের গন্ডগোল, মানসিক বিষন্নতা প্রভৃতি রোগ ধনু রাশি প্রভাবিত রোগ।
মকর রাশি: চর্মরোগ, চোখের রোগ, টনসিল, লিভারের রোগ, গেঁটেবাত, সায়াটিকা প্রভৃতি মকর রাশি প্রভাবিত রোগ।
কুম্ভ রাশি: লিভারের রোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, চোখের রোগ, অর্শ, মাথাব্যথা প্রভৃতি কুম্ভরাশি প্রভাবিত রোগ।
মীন রাশি: পায়ে ব্যথা, পিত্ত রোগ, চক্ষুরোগ, কন্ঠ-তালু- জিভের রোগ, টনসিল, হাইড্রোসিল প্রভৃতি মীন রাশি প্রভাবিত রোগ।
নবগ্রহের কাতরতা (রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে):
রবি গ্রহ: সত্তত্বগুণ প্রধান, রক্তবর্ণ পিত্ত প্রকৃতির নৈসর্গিক শুভ গ্রহ। মানবদেহের মস্তিষ্ক, হৃদয়, চক্ষু, মুখমণ্ডল এবং শরীরের দক্ষিণ অংশেে রবির অধিকার।
চন্দ্র গ্রহ: সত্ত্বগুণ প্রধান, কফ প্রকৃতির নৈসর্গিক শুভ গ্রহ। দেহের মধ্যে কন্ঠ, তালু, রক্ত ও শরীরের বাম অংশে চন্দ্রের অধিকার।
মঙ্গল গ্রহ: তম-রজোগুণ প্রধান, পিত্ত প্রকৃতির নৈসর্গিক পাপ গ্রহ। দেহের মধ্যে বাম কর্ণ, কোটি, রক্তবাহী ধমনী ও গুচ্ছদেশের কারক মঙ্গল।
বুধ গ্রহ: রজোগুণ প্রধান বায়ু-পিত্ত-কফ প্রকৃতির নৈসর্গিক শুভ গ্রহ। মানবদেহের জিভ, পিত্ত, ত্বক, শরীরের নিম্নভাগে ও বাক্যে বুধের অধিকার।
বৃহস্পতি গ্রহ: সত্ত্বগুণ প্রধান, কফ প্রকৃতির নৈসর্গিক শুভ গ্রহ।মানব দেহের মধ্যে ফুসফুস, মেদ, রক্তবাহী নালী, কন্ঠে এবং হস্তে বৃহস্পতির অধিকার।
শুক্র গ্রহ: রজোগুণ প্রধান, কফ ধাতু প্রকৃতির নৈসর্গিক শুভ গ্রহ। মানবদেহে নাসারন্ধ্র, যকৃত ও শুক্র ধাতুতে শুক্রের অধিকার।
শনি গ্রহ: তমোগুণ প্রধান, বায়ু প্রকৃতির নৈসর্গিক অশুভ গ্রহ। মানবদেহে দক্ষিণকর্ণ, প্লীহা, মস্তিষ্ক, শিরা ও মূত্রাশয় শনির অধিকার।
রাহু গ্রহ: তমোগুণ প্রধান, বায়ু প্রকৃতির নৈসর্গিক অশুভ গ্রহ।মানব দেহের মধ্যে দাঁত, অস্থি, যে কোন প্রকার পচন জনিত ঘা রাহুর প্রভাবে প্রভাবিত হয়।
কেতু গ্রহ: তমোগুণ প্রধান, বায়ু প্রকৃতির নৈসর্গিক পাপ গ্রহ।মানবদেহের চর্মরোগ, গুহ্য রোগ, পুরুষত্বহীনতা, এলার্জি ও বিষক্রিয়ার কারক কেতু।
ত্রিদোষের (বায়ু-পিত্ত-কফ) কাতরতা অনুযায়ী নবগ্রহ কে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা হয়েছে -
- বায়ু ধাতুর কারক - রাহু, কেতু, শনি ও বৃহস্পতি।
- পিত্ত ধাতুর কারক - রবি ও মঙ্গল।
- কফ ধাতুর কারক - শুক্র চন্দ্র ও বুধ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন